কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি
কালীগঞ্জে এ বছর ধানের ভালো ফলন ও বেশি দাম পাওয়ায় খুশি বোরো চাষিরা। বিঘাপ্রতি ২৫ থেকে ৩০ মণ ধানের ফলন পেয়েছেন কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর বাম্পার ফলন হয়েছে। চাষিরা জমি থেকে মাড়াইয়ের পরে দুই বার রোদে শুকিয়ে বাজারে বিক্রি করছেন। যা বিগত বছরের তুলনায় বেশি। ফলন ও দাম ভালো হওয়ায় বেশ খুশি চাষিরা। কালীগঞ্জ উপজেলায় ৯৭ শতাংশের বেশি ধান কেটে কৃষকরা ঘরে তুলেছেন।
এ বছর বৈশাখ মাসে তেমন ঝড়-বৃষ্টি হয়নি। বিশেষ করে মহেশপুর ও কোটচাদপুর উপজেলায় একদিন হালকা শিলা বৃষ্টিপাত হওয়ায় বিভিন্ন কৃষকের ধানের বেশ ক্ষতি হয়েছিল। কালীগঞ্জের কুষক সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ১ বিঘা জমির ধান মাড়াই করে ৩০ মণ ফলন পেয়েছেন। কোটচাদপুর নওদাগ্রামের সালাউদ্দন মৃধা বলেন, তার এক বিঘা জমিতে ২৮ মণ ও অপর এক বিঘা জমিতে ৩০ মন ধানের ফলন। কালীগঞ্জ উপজেলার ১১ ইউনিয়নে সোনালী ধানের মাঠে ধান কাটার শেষ প্রান্তে পৌচেছে কৃষকেরা। কৃষকের উঠোনে উঠোনে এখন ধান মাড়াইয়ের কাজ চলছে পুরোদমে। কোটচাঁদপুর নওদাগ্রামের সালাউদ্দিন মৃধা বলেন, ধানের ফলন খুবই ভালো হয়েছে। এবার সার-কীটনাশকের দাম নাগালে ছিল।
কিন্তু শেষ সময়ের বৃষ্টিপাত ও দমকা হাওয়ায় ধান গোছানো নিয়ে চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছিল। অনেকেই মাঠ থেকে ধান মাড়াই করে নিতে দিন রাত কাজ করেছে। বেশি পরিশ্রম করেও ফলন বেশি হবার কারনে কৃষকরা বিগত বছরের চেয়ে এবার অনেক খুশি, যেহেতু ধানের ফলন হয়েছে বাম্পার। আবার গো খাদ্যের জন্য কৃষকরা বিচালি ও বাড়িতে নিতে পেরেছে। এ বছর ধান কাটার শ্রমিক ছিল বেশি এ কারনে কৃষকদের বোরো ধান ক্ষেত থেকে কাটতে বাড়িতে আনতে তেমন টা বেগ পেতে হয়নি। বেশির ভাগ কৃষকরা কলছেন, এবার ধানের ফলন বেশ ভালো হয়েছে কম খরচে চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছি। যদি বাজারে দাম ঠিক থাকে, তাহলে এই ধান আমাদের পরিবারের সচ্ছলতা আনবে। বোরো ধান আবাদ করতে জমিতে কোনও চাষ করতে হয় না। বর্ষার পানি চলে যাওয়ার পর বোরো ধানের চারা রোপণ করলে এই ধানের আবাদ শেষ হয়ে যায়।
সুতরাং বোরো ধানে অনেক লাভ হয়। তবে আবহাওয়া অনুকূলে না থাকলে পুরো ধান নষ্ট হয়ে যায়। ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের বলছে, চলতি বোরো মৌসুমে জেলায় মোট ৯০ হাজার ১৯৪ হেক্টর জমিতে ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তন্মধ্যে সদর উপজেলায় ২৩ হাজার ৮৭৫ হেক্টর, কালীগঞ্জে ১৫ হাজার ৯৫৬ হেক্টর, কোটচাঁদপুর ৬ হাজার ৬৫ হেক্টর, মহেশপুরে ২১ হাজার ৮৬০ হেক্টর, শৈলকূপায় ১৩ হাজার ২১৮ হেক্টর ও হরিণাকুন্ডু উপজেলায় ৯ হাজার ৩০৬ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে।
ফলে লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে জেলায় মোট ৯০ হাজার ২৮০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপপরিচালক ষষ্টি চন্দ্র রায় বলেন, এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া, সার-কীটনাশকের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকা ও কৃষি কর্মকর্তাদের সার্বক্ষণিক তদারকির কারনে ভালো ফলন হয়েছে। এবার কৃষক ধানের ভালো দাম পাচ্ছেন। তবে শেষ সময়ের বৃষ্টিতে ধান কাটা ও মাড়াইয়ে কিছুটা বেগ পেয়েছেন কৃষকরা। তবে এতে এলাকার কৃষকরা তেমন একটা ক্ষতির মুখে পড়েনি।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
